ঠিকানা: 291 চরপাড়া বাইলেন, ময়মনসিংহ 2200
ফোন: 01611-119722
মূর্মুষ (critical) রোগীদের জন্য করনীয় বিষয়গুলো দ্রুত এবং সঠিকভাবে পালন করা অত্যন্ত জরুরি। এটি অনেক সময় জীবন বাঁচাতে পারে। মূর্মুষ রোগীদের জন্য করনীয় বিষয়গুলো নিম্নরূপ:
প্রাথমিক চিকিৎসা:
শ্বাস–প্রশ্বাস নিশ্চিত করা:
প্রথমেই নিশ্চিত করতে হবে যে রোগী শ্বাস নিচ্ছেন কিনা। যদি রোগী শ্বাস নিচ্ছেন না, তাহলে প্রথমেই তার শ্বাসনালী পরিষ্কার করুন এবং প্রয়োজনে কৃত্রিম শ্বাস (মুখে-মুখে শ্বাস দেওয়া বা রেসকিউ ব্রেথিং) দিন। যদি শ্বাসনালীতে কোন কিছু আটকে থাকে, তা সরিয়ে দিন। এই পর্যায়ে শ্বাসনালী খুলে দিতে পারে এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি, যেমন:
রক্তসঞ্চালন নিশ্চিত করা:
রোগীর পালস (নাড়ির গতি) পরীক্ষা করুন। যদি পালস না পাওয়া যায় বা হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) দিন। সিপিআর শিখে রাখা অত্যন্ত জরুরি, কারণ এটি জীবন রক্ষাকারী হতে পারে। সিপিআর দেয়ার সময়:
হাসপাতালে নেওয়া:
দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া:
মূর্মুষ রোগীর ক্ষেত্রে সময় অত্যন্ত মূল্যবান। যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। এই ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ডাকাই সেরা পদ্ধতি। অ্যাম্বুলেন্সে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষিত কর্মীরা থাকেন, যারা রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারেন। যদি অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া না যায়, তাহলে দ্রুততার সাথে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে হাসপাতালে নিন।
অন্যান্য করনীয়:
শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ:
রোগীর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাকে গরম বা ঠান্ডা জায়গায় রাখুন। যদি রোগী ঠান্ডায় আক্রান্ত হন, তাহলে তাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখুন এবং গরম পরিবেশে রাখার চেষ্টা করুন। যদি রোগী অতিরিক্ত গরমে আক্রান্ত হন, তাহলে তাকে ঠান্ডা পরিবেশে নিয়ে আসুন এবং প্রয়োজনে শরীর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দিন। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে শরীরের খোলা অংশ ঢেকে রাখুন এবং প্রয়োজনে ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
রক্তপাত বন্ধ করা:
যদি রোগী রক্তপাত করছে, তাহলে সেই জায়গায় চাপ দিয়ে রক্তপাত বন্ধ করার চেষ্টা করুন। পরিষ্কার কাপড় বা ব্যান্ডেজ ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে ট্যুর্নিকেট (tourniquet) ব্যবহার করুন, তবে তা কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা আগে থেকে শিখে নেয়া প্রয়োজন। রক্তপাত বন্ধ করার জন্য:
পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ:
প্রয়োজন হলে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করুন। বাড়িতে অক্সিজেন সিলিন্ডার বা অক্সিজেন কনসেনট্রেটর থাকলে, তা ব্যবহার করতে পারেন। অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে:
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ:
রোগীর আগের কোন রোগের ইতিহাস বা কোন ওষুধ গ্রহণ করে থাকলে, তা চিকিৎসককে জানানো। রোগীর মেডিক্যাল ইতিহাস এবং অ্যালার্জির তথ্য স্বাস্থ্যকর্মীদের জানানো অত্যন্ত জরুরি।
সতর্কতা:
মানসিক স্থিরতা বজায় রাখা:
এ সময়ে মানসিক স্থিরতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। ধৈর্য ধরে চিকিৎসকদের নির্দেশনা অনুসরণ করুন এবং প্রয়োজনে অন্যদের সাহায্য নিন। রোগীর স্বজনদের সান্ত্বনা দিন এবং তাদেরকে আশ্বস্ত করুন। মানসিক স্থিরতা বজায় রাখার জন্য:
সঠিক তথ্য প্রদান:
রোগীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সঠিক তথ্য প্রদান করুন, যা দ্রুত চিকিৎসা নিতে সাহায্য করবে। রোগীর চিকিৎসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, পুরনো রিপোর্ট এবং ওষুধের তালিকা সঙ্গে রাখুন। সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে দ্রুত এবং সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব।
সংক্ষেপে করণীয়গুলো:
মূর্মুষ রোগীদের ক্ষেত্রে জরুরি চিকিৎসা এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হতে পারে। মূর্মুষ রোগীর সেবা দিতে সবসময় প্রস্তুত থাকুন এবং প্রয়োজনে স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহায্য নিন।
শেষ কথা:
মূর্মুষ রোগীদের চিকিৎসায় পরিবারের সদস্যদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। তাদের সাহসিকতা, মানসিক স্থিরতা এবং সঠিক পদক্ষেপ রোগীর জীবন বাঁচাতে পারে। তাই সবসময় সতর্ক থাকুন এবং প্রাথমিক চিকিৎসার কৌশলগুলো শিখে রাখুন।
Mymensingh blood bank & transfusion center