

জামিয়া ইসলামিয়া মোমেনশাহী (আরও পরিচিত জামিয়া ইসলামিয়া সেহড়া, মোমেনশাহী) ময়মনসিংহ জেলার চরপাড়া, কৃষ্টোপুর রোড এলাকায় অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী কওমি মাদরাসা।
মাদ্রাসাটি ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ছিলেন মনজুরুল হক ও নেওয়াজ আলী, এবং শহর ও শহরতলীর আলেম-মাশায়েখ ও স্থানীয় ধর্মভীরু ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতা ছিল।
মাদ্রাসার শুরুতে নাম ছিল ‘দারুল উলুম’। পরবর্তীতে ১৯৭৬ সালে আশরাফ আলী থানভীর খলিফা আতহার আলী মাদ্রাসার পৃষ্ঠপোষকতার দায়িত্ব নেন এবং তখন নাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম “জামিয়া ইসলামিয়া” রাখা হয়।
মাদ্রাসার জমি রহমজান খাতুন নামে একজন মহিলার মাধ্যমে দান করা হয়; তিনি ছিলেন নেওয়াজ আলীর সহধর্মিণী।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অনেক শিক্ষাবিদ, আলেম ও মাশায়েখ—যেমন ফয়জুর রহমান, মিয়া হোসাইন—মাদ্রাসাটি গড়ে উঠাতে এবং পরিচালনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। বর্তমানে মাদ্রাসার মহাপরিচালক (Director General / মুহতামিম) হচ্ছেন আনওয়ারুল হক।
জামিয়া ইসলামিয়া মোমেনশাহী কওমি (“Qaumi”) ধারার মাদ্রাসা; সেখানে দ্বীনি শিক্ষা প্রধানত আরবি ভাষায়, হাদিস-ফিকহ, তাফসীর, আকাইদ, সার্বিক আরবি ব্যাকরণ, নাহু–সরফ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পড়ানো হয়। শিক্ষার্থীরা সাধারণভাবে নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করে:
শিক্ষণের পাশাপাশি প্রচলিত ও মৌলিক ধর্মীয় পাঠ অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খল পরিবেশে দ্বীনি চর্চা, সালাত ও ধর্মীয় জীবনযাপন শেখানো হয়। পাশপাশি, মাদ্রাসার বিভিন্ন বার্ষিক মাহফিল ও সম্মেলন আয়োজন করা হয় যা স্থানীয় জনসমাগম ও ধর্মচেতনায় ভূমিকা রাখে। Unis10+1
জামিয়া ইসলামিয়া মোমেনশাহী শুধুমাত্র শিক্ষার কেন্দ্র নয় বরং স্থানীয় মুসলিম সমাজ ও ধর্মচর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। “ময়মনসিংহের প্রাচীনতম দ্বীনি বিদ্যালয়” হিসেবে এই মাদ্রাসার মর্যাদা রয়েছে।
প্রাক্তন ছাত্রদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়, যা মাদ্রাসার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও যোগাযোগ রক্ষা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশ রূপান্তর
স্থানীয় ফেসবুক পেজ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে মাদ্রাসার ছাত্র-সংক্রান্ত খবর, ভর্তি বিজ্ঞপ্তি, মাহফিল, বয়ান সহ নানা কার্যক্রম জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়।
মাদ্রাসার অবস্থান শহরের কেন্দ্রস্থল চরপাড়া, Kristopur Road এর কাছে — যা যাতায়াত ও যোগাযোগের দিক থেকে সুবিধাজনক।
নাম পরিবর্তন ও সম্প্রসারণের সময় সাততলা ভবন — মাদ্রাসার বড় এক ভবন গড়ে ওঠে, যা ছাত্রাবাস, পাঠদান, সভা ও অন্যান্য কার্যক্রমের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়। YouTube
পরিচালনায় থাকেন মুহতামিম মহোদয় (বর্তমানে আনওয়ারুল হক), এবং আলেম ও শিক্ষক দলের সমন্বয়ময় কাজ চলমান আছে।
“জামিয়া ইসলামিয়া মোমেনশাহী” একটি গুরত্বপূর্ণ ধর্মশিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা ১৯৪২ সাল থেকে অনেক সংগ্রাম ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে। স্থানীয় ও জাতীয় ধর্মীয় শিক্ষাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে, দ্বীনি শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই আধুনিক বিশ্বের চাহিদা মেটাতে পারলে এই জামিয়া আরও বেশি ভূমিকা পালন করতে পারবে। ইতিহাস ও ইতিবাচক অবদান রয়েছে, ভবিষ্যতে যদি আরেকটু পরিকল্পনা ও আধুনিকীকরণ হয়, তবে অধিক শিক্ষার্থী, অধিক সাফল্য ও অধিক সামাজিক প্রভাব আশা করা যায়।